জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া : রাঙ্গুনিয়ার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনসুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেনপ্রশাসন। উপজেলার পোমরা, সরফভাটা ও ইসলামপুর ইউনিয়নে ব্যাপক সন্ত্রাসেরআশংকা করছেন ভোটাররা। এই তিন ইউনিয়নে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আনাগোনাবেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পুলিশ প্রশাসনও এসব ইউনিয়নের প্রতিটিভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছেবার্তা পাঠিয়েছেন। এই তিন ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র গুলোতে যাতে কোন ধরণেরপেশী শক্তি ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রস্তুতি রয়েছে বলেপ্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। পোমরা ইউনিয়নে মেম্বার প্রার্থীদেরভোট গোপনে এবং চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট প্রকাশ্যে মারার জন্য সরকারিদলের নেতাকর্মীরা গত বুধবার বিকেলে বৈঠক করেছেন বলে বিএনপির প্রার্থীআজিজুর রহমান অভিযোগ করেছেন। তিনি এই ইউনিয়নে ভোট ডাকাতির আশংকা করছেন।সরফভাটা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী শেখ ফরিদ চৌধুরী ও আ.লীগেরবিদ্র্রোহী প্রার্থী মুজিবুল ইসলাম সরফির কর্মীরা মূখোমূখী অবস্থানেরয়েছেন। সন্ত্রাসের জনপদ খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার এই ইউনিয়নে ব্যাপক সন্ত্রাসেরআশংকা করছেন ভোটাররা। ইসলামপুর ইউনিয়নেও আ.লীগের প্রার্থী ইকবাল হোসেনচৌধুরী মিল্টন ও বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুদ্দৌল্লাহ দুলালের কর্মীদেরমধ্যে ব্যাপক সন্ত্রাসের আশংকা দেখা দিয়েছে। এই ইউনিয়নে বিদ্রোহীপ্রার্থীর মো. মহসিন নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবেআ.লীগের প্রার্থী ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন দাবী করেছেন একজন দরিদ্র ওনিরীহ মানুষকে রাতের আঁধারে নিজেদের লোক দিয়ে হত্যা করে ঘোলা পানিতে মাছশিকারের অপচেষ্ঠা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুদ্দৌল্লাহ দুলাল। সবমিলিয়ে এই তিন ইউনিয়নের ভোট গ্রহণে প্রশাসনের আলাদা প্রস্তুতি রয়েছে।ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছে গেছে ভোট গ্রহণের সরঞ্জাম।বিজিবি-পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে নিরাপত্তার প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে।এখন শুধু ভোট উৎসবের অপেক্ষায় আছেন রাঙ্গুনিয়াবাসী। গতকাল সকালেইরাঙ্গুনিয়ায় এসে পৌঁছেছে চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)সদস্য। এছাড়া র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও জেলা পুলিশেরপক্ষেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে নির্বাচনী এলাকায়বিজিবি সদস্যরা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকেপ্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা ব্যাপকশো-ডাউন ও শেষ মূহুর্তের প্রচারণা চালিয়েছেন। ১২টি ইউনিয়নের ৬ জনরির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নে ৯টিকরে কেন্দ্র রয়েছে। ১২ ইউনিয়নের মোট ১০৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।তৎমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৮৫টি ভোট কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেচিহ্নিত করেছেন প্রশাসন। রাঙ্গুনিয়ার ১২ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেওচার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হওয়ায় এসবইউনিয়নে শুধুমাত্র মহিলা ও পুরুষ মেম্বার পদে ভোট গ্রহণ করা হবে।চেয়ারম্যান পদে বাকি আট ইউনিয়নে চুড়ান্ত প্রতিদ্বন্ধীতায় নেমেছেন ২২ জনপ্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯৩ জন ও সাধারন সদস্য পদের ৩৯১জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। রাঙ্গুনিয়ার ১২ ইউনিয়নে ১লাখ ৭৩ হাজার ৫০১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদিকে গতকালমধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। এজন্য শেষদিনেরজমজমাট প্রচারণায় সরগরম ছিল সমগ্র উপজেল। ভোটারদের মনজয়ের প্রাণান্তকরচেষ্টায় দুয়ারে দুয়ারে গেছেন প্রার্থীরা। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াএখনও পর্যন্ত মোটামুটি শান্তিপূর্ণই দেখা গেছে নির্বাচনী পরিবেশ। তবেভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যানপ্রার্থীরা আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মজুমদার জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণপরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি মাঠে নেমেছে।